করোনা উপলব্ধি

করোনা উপলব্ধি 

মো: এনামুল হক 


বিশ্বজোড়া আতঙ্কময় করনার ভয়ে আজ আমরা সবাই মিলে খোদার কাছে কতই না কাকুতি মিনতি করছি। ক্রন্দনে আর আস্ফালনে একাকার করে দিচ্ছি এ উপাসানালয় হতে ও উপাসানালয়, এগৃহ হতে ওগৃহ, এদেশ থেকে ওদেশ, এমহাদেশ থেকে ও মহাদেশ। মুক্তির জন্য কত আহাজারি কত হাহাকার সেখানে। কিন্তু মৃত্যু তালিকায় সেখানে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। এ মহামারি হতে রক্ষা পেতে নানা প্রচেষ্টায় হয়রান হয়ে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে তাবৎ সব হুমড়োচুমড়ো চিকিৎসা বিজ্ঞানী, ডাক্তার, নার্স, ধর্মগুরু আর রাজনীতিবিদেরা। কিন্তু একথা ভুলে গেলে চলবে না যে, আমাদের দু হাতের কামায়ের বিপরীতে তাঁর নির্ধারিত ফায়সালা আমাদের মেনে নিতেই হবে। পরম করুনাময় সেই প্রভু হয়তো তাঁর রহমতের অসীম ভান্ডারের অছিলায় আবারো আমাদের সব পাপ পঙ্কিলতা নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন। তাঁর কুদরতি ক্ষমতায় নিমিষেই স্তব্ধ করে দিবেন এই ক্রমবর্ধমান ভয়াল মরণ মিছিল। কারণ আল্লাহর প্রিয় হাবিব মুহাম্মদ (সঃ) এর উম্মতের  উপর মুছিবাত বা গজব কখনও স্থায়ী হয়নি এবং তা হতে পারে না। কিন্তু তাঁর নানা গায়েবী অছিলায় এই মৃত্যু পুরী সজীব হবার পর আমরা স্বভাবসূলভ ভঙ্গিতে আবার যেন সেই পরম করুনাময়কে অকৃতজ্ঞের মত ভুলে না যায়। আস্তে আস্তে আমাদের সেই ভয়ঙ্কর রূপ আবার যেন কুচ্ছ্বিৎ শয়তানের আদলে ভয়াল থাবা হয়ে বেরিয়ে না আসে। যদিও ইতিমধ্যে এই দূর্যোগের ঘনঘটায় সুযোগের আসায় ঘাপটি মেরে থাকা প্রকাশ্য শত্রু শয়তানের 

কু-প্ররোচনায় নানা জায়গার সরকারি ত্রাণের ক্ষেত্রে আমাদের অযাচিত চৌর্যবৃত্তি ধরা পড়েছে। মহা দূর্যোগে মানুষ যখন উদ্ভ্রান্তের মত একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ঠিক তখন মানুষরূপি কতক নেমোক হারামের দল নিজেদের আখের গোছানো নিয়ে হাভাতের মত ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমার মনে হয়, কেয়ামতের মত মহাপ্রলয়ের দিনেও হয়ত এদের বড়লোক হবার কুচ্ছ্বিৎ মনোবাসনা পূর্ণ্য হবে না। আচ্ছা, এইটুকু বোঝার ক্ষেত্রে আমাদের এত প্রতিবন্ধিতকা কেন যে, সৃষ্টিকর্তা নানা পাপ পঙ্কিলতা থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য মানুষকে নানা বিপর্যয়ের মাধ্যমে পরিক্ষা করে থাকেন। যাইহোক, এখন সময় যেহেতু তাঁর রুষ্ট মেজাজকে তুষ্ট করার, সেহেতু সুনির্দিষ্ট নিদর্শনের এই অন্তিম পর্যায়ে এসে নিষিদ্ধ আর অপবিত্র সেই ক্যাসিনো আর মদের বারগুলো যেন আবার সাজসাজ কলরবে মাতিয়ে না তুলি। ধর্ম বা রাজনীতি নিয়ে নানা ফেতনা আর রেষারেষিতে মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বে যেন আর বয়ে না আনি মানুষের পবিত্র রক্তের অযাচিত লেলিহান। নিষ্ঠুর পাষণ্ডের মত যেন পারমানবিক শক্তিসহ অন্যান্য শক্তি বৃদ্ধিতে আর প্রতিযোগিতা শুরু না করি। যুদ্ধাস্ত্রের ঝনঝনানিতে আজকের মত এই শান্ত বিশ্বটা যেন আর প্রকম্পিত না হয়। রিপুজি হতে গিয়ে আর কোন আইলানের লাশ যেন নিথর দেহে সাগরপাড়ে পড়ে না থাকে। কাঁটাতারের বেড়ায় যেন আর কোন নিষ্পাপ ফেলানির করুন লাশ ঝুলানো না থাকে। বাবরি মসজিদ নিয়ে টানাহেচড়া আর জয় শ্রীরাম প্রতিষ্ঠায় নির্মমতা আর নিষ্ঠুরতা নিয়ে যেন আর কোন মানুুষের রক্ত নিয়ে হোলি খেলা না হয়। অস্থায়ী সম্পদ আর বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রভাবে যেন রোহিঙ্গা নিধনে পৈশাচিক আনন্দে মেতে না উঠি। চিনের উইঘুরু মুসলিম উপজাতিসহ পৃথিবীর সব সংখ্যালঘু মাজলুমকে নিধনের জন্য যেন আর পৈশাচিক পরিকল্পনায় নৃত্য না করি। খুব হয়েছে । এবার যেন সবাই আল্লার দোহায় দিয়ে ক্ষান্ত হই। লেজুড় বৃত্তি বাদ দিয়ে অসাঢ় আর অথর্ব ওআইসি, জাতিসঙ্ঘসহ সকল সঙ্ঘকে স্বাধীনভাবে মানবতার জন্য একটু কাজ করতে দিই। সকল মোড়লিপনার অবসান ঘটিয়ে পৃথিবীকে একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে দিই। বিশ্বমিডিয়ার বিভিন্ন ওয়েবসাইট চ্যানেলে আপলোডকৃত সকল রমরমা অশ্লিল পর্ণ্যসাইটগুলো চিরতরে এমন করে ধ্বংশ করে দিই যাতে আর কোনদিন সেই লিংক দিয়ে কোন ব্যক্তি তাতে প্রবেশ করতে না পারে। মানবধিকারের নাম করে যেন আর কোনদিন সমকাম, লেসবিয়ানসহ যাবতীয় বিকৃত সেক্সকে উৎসাহিত না করি। বরং তা সারা বিশ্ব থেকে আইন করে চিরতরে বন্ধ করি। তামাক আর মদ্যজাত পণ্যের উৎপাদন,রপ্তানি আর ডিলারশীপকে সারা বিশ্ব থেকে উৎখাত করি। এখন থেকে হালাল আর রুচিসম্মত খাবার দাবার খাইতে আমরা সবাই যেন অভ্যস্ত হই। আর এসব অস্বাস্থ্যকর জীবন পদ্ধতি যে যাপন করতে না হয় সেই শিক্ষা দেবার জন্যই হয়তো খোদাতায়ালা সারা বিশ্বকে এমন উদাহরণ স্বরূপ লকডাউন করে রেখেছে যাতে সেগুলো থেকে আমরা বিরত থাকি। আর এটা এমনই এক চরম বাস্তবতা যা থেকে শিক্ষা নিয়ে তওবা করে ফিরে আসার এটাই হচ্ছে মক্ষম সময়। চরম বিপর্যয়ের এই ধাপেও যদি আমরা ফিরে না আসি তাহলে বুঝতে হবে হয়তোবা এর চেয়েও ভয়ঙ্কর কোন বিপর্যয় আমাদের এই অসচেতন মানব জাতির জন্য নির্মোহভাবে অপেক্ষা করছে। তাই এই মুহূর্ত হতে আমাদের কল্যানের জন্যই আমরা যেন পাড়া-মহল্লা, জাতীয়-আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক সব ধরনের হিংসা হতে বিরত থাকি। কারণ অন্যান্য পাপ কাজের জন্য সংঘটিত সমস্ত পাপই ফেরেস্তাদ্বয় দ্বারা লিখিত হয় কিন্তু পক্ষান্তরে তার বদৌলতে কোন পূণ্য নাকি কাটা হয় না। কিন্তু হিংসা এমন একটা বিষয় যার জন্য সকল নেক আমল ধ্বংশ হয়ে যায়। হে জাগ্রত বিবেক, চেয়ে দেখুন আজ কি অদৃশ্য সুশৃঙ্খল সিস্টেমে তাবৎ দুনিয়ার সব বাঘা বাঘা মসজিদ, মন্দির, গীর্জা পূণ্যার্থীদের অভাবে কেমন খাঁ খাঁ করছে। প্রভু হয়ত আজ তাঁরই ইবাদতের জন্য মহল্লায় মহল্লায় নানা ফিতনায় প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক লোক দেখানো বন্দেগিতে আর খুশি নয়। সে চায় যেন আমাদের আপন দেহ গৃহের সেই আপন হৃদয় মন্দিরের কালিমা লেপনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করতে। যেখানে থাকবে না কোন হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা, গীবত, চোঘলখোরি, চাটুকারিতা, নিন্দা, মুনাফেকি আর কুফরিভাব, লোভ-লালসা, অবৈধ যৌনাকাঙ্খা, সুদ, ঘুষ, জেনা, ব্যভিচারের মত অনৈতিক কাজ। দৈনন্দিন চর্চিত আমাদের সকল প্রকার হাক্কুল্লাহ এবং হাক্কুল ইবাদ যেন সেই মহান প্রভুর ইচ্ছামাফিকই পরিপূর্ণভাবে সম্পাদিত হয়। মৌলিক চাহিদা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা আর চিকিৎসার জন্য যেন আর সাধারণ মানুষের মাঝে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি না করা হয়। কেননা আলো, বাতাস, পানি, মাটি, অক্সিজেন ইত্যাদি যেমন তিনি পর্যাপ্ত পরিমান মানুষকে দিয়ে তাদের কোন অভাব রাখেন নি। তদ্রুপ মৌলিক সব অভাবের উপকরনগুলোও তিনি অগাধ পরিমান দিয়ে রেখেছেন। শুধু আমাদের হেয়ালিপনায় অযাচিত অপচয়ে আমরা আল্লাহর রহমতকে সংকটে ফেলায় যা কোনভাবেই কাম্য নয়। তাঁর অস্থিত্বের প্রমাণস্বরূপ এই ইউনিভার্স কত বিষ্ময় আর কত অফুরন্ত মুজেজায় ভরপুর হয়ে আছে, অথচ এখানে তারপরেও কতশত নাস্তিক, মুরতাদ আর কাফেরদের কত খোঁড়া যুক্তির কানাকড়ি চারিপাশে ছড়িয়ে আছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। প্রভু তাঁর উত্তম কৌশলের মাধ্যমে শয়তানের ধোকায় থাকা অবুঝ মানব জাতিকে তারই দিকে ফিরিয়ে আনতে চায়। সে জানে তাঁর এই পৃথিবীর অসংখ্য কৃতজ্ঞ বান্দার প্রকৃত দরদমাখা জিকির আসকার আর কান্নামাখা ইবাদতের অন্তিম আহাজারিতে মানুষকে এই দূরাবস্থা হতে উত্তোরণ করালেও অসংখ্য অকৃতজ্ঞ আর উদ্ধত্ব বান্দা আবার তার পূর্বের অবস্থানে ফিরে যাবে। বিপদের সময় আমরা প্রভুর কাছে কত রকম তওবা করে বা আবেগী অনুনয় বিনয় করে সেই বিপদ থেকে তৎক্ষণাৎ উত্তোরণ বা মুক্তি পেতে চায়। কিন্তু সত্যতার কি নির্মম পরিহাস, দয়াময় খোদার অনুগ্রহে তা থেকে উত্তোরণ পেয়ে আমরা এই বেখেয়াল অকৃতজ্ঞ জাতি আবার সেই পূর্বে যা ছিলাম তাই হয়ে যায়। তাই হে আশরাফুল মাখলুকাত খ্যাত মানব জাতি, আসুন আমরা শেষবারের মত চেষ্টা করে দেখি যে, আমাদের কৃতকর্মের কারণে পৃথিবীতেই যেন রাহমানুর রাহীম আল্লাহ তায়ালাকে তাঁর ভয়ঙ্কর সেই কাহ্হার নামটা আর ধারণ করতে না হয়। স্বর্গে যাবার আগেই যেন আমরা এই পৃথিবীকে আরেকটা স্বর্গে পরিণত করতে পারি আর নরকের ভয়াহবহতা সম্পর্কে সর্বদা ওকিফহাল থাকি। মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁর শখের সৃষ্টি মানুষকে কখনই কষ্টে ফেলতে চান না। আর সেকারনেই তিনি ঐ মানব সম্প্রদায়ের জন্য যে বিষয়গুলোতে উপকার নিহিত তা তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। আসুন আমরা তাঁর সেই পরম ডাকে একাত্মতা প্রকাশ করে সেই অনুপাতে নিবিড়ভাবে কাজ করি। আমরা জানি এমনিতেই এই পৃথিবীর অনেক বয়স পার হয়ে গেছে। বিজ্ঞানের সূত্র হোক আর ধর্মের ভবিষ্যৎ বাণীই হোক এই মহাবিশ্বে চরম ধ্বংসলীলা বা কেয়ামত অবশ্যই সংঘটিত হবে যা খুব সন্নিকটেই হবে বলে আমরা সুনিশ্চিত। এমন যেন না হয় যে, মহাপ্রলয় স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের মাঝে চলে আসছে অথচ তওবা বা অনুশোচনা করে আমাদের শোধরানোর কোন সুযোগই হচ্ছে না। আর এই শোধরানোর জন্য আমরা পৃথিবী কাঁপানো কিছু অন্যায় আর কখনই যেন প্রশ্রয় না দিই। যেমনঃ আল্লাহর জমিন মায়ানমার নামক স্থান হতে নিষ্ঠুরভাবে বিতাড়িত নির্যাতিত রোহিঙ্গা যাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে না দিয়ে এই বিপর্যয়ে পরিপক্ক বোধশক্তির উদয় ঘটিয়ে তাদের নিজ মাতৃভূমিতে একটু ঠাই দিন। অমানুবিকভাবে নির্যাতিত চিনের উইঘুরু মুসলিম উপজাতিকে তাদের স্বাধীন জীবনের অধিকার স্বমহিমায় ফিরিয়ে দিন। দয়া করে আর কখনই জুলুম নির্যাতন এবং বিভিন্ন অন্যায় শর্ত দিয়ে কাশ্মীরীদের আর দুই দেশের হিংস্র রাজনীতির বলি হতে দেবেন না। বিনা দোষে সপ্তাহের পর সপ্তাহ লকডাউন হওয়া সেই কাশ্মীরী বালিকা নাফিসার প্রার্থনার দীর্ঘ গরম নিঃশ্বাসের কারণ যেন আর না হই। নির্যাতন আর লাঞ্ছনার শিকার হয়ে সিরিয়ার ঐ ছোট্টু শিশুটিকে যেন অভিমানের সাথে আর বলতে না হয়- ওপারে যেয়ে আমি আল্লাহর কাছে সব বলে দিব। সাথে সাথে পৃথিবীর আর কোন রাষ্ট্রকে ফিলিস্তিন, গাজা, সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া, গোয়ান্তোনামো কারাগরের নির্যাতিত মানুষের আহাজারিতে বাতাস ভারি হতে দেবেন না। পাল্লা দিয়ে পরিক্ষামূলক ক্ষেপনাস্ত্র পরিক্ষা, ক্ষমতা আর যুদ্ধাস্ত্রে একে অন্যকে ছাড়িয়ে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠবেন না। করোনা বিপর্যয় থেকে মহান রাব্বুল আলামিনের কৃপায় যদি আবারও আমাদের মুক্তি মেলে তাহলে পারস্পরিক সহমর্মিতায় পৃথিবীকে যেন আবারো আমরা সবাই মিলে স্বর্গীয় সাজে সাজাতে উদ্বুদ্ধ হই। রোগ-শোক, বালা-মছিবত, ক্ষুধা-দারিদ্র্যে একে অন্যকে অতি মমতায় এবং প্রকৃত মানবিকতায় সহযোগীতা করি আর সহমর্মিতা জানায়। এই পৃথিবী নামক গ্রহটাকে একটা গ্রাম বিবেচনা করে করনার মত সব ভয়াবহ দূর্যোগকে একসাথে কাটিয়ে ওঠার মানসিকতা তৈরি করি। আর কখনই হানাহানি, মারামারি আর রক্তারক্তিতে হাত রঞ্জিত বা কলুষিত না করি। অনেক হয়েছে এবার ক্ষান্ত হই। ক্ষণস্থায়ী এবং নশ্বর জঞ্জালময় পৃথিবীতে অনর্থক স্বার্থ অন্বেষণকে জলাঞ্জলি দিয়ে করোনা যুগের গৃহ অন্তরীণে যাওয়া সন্ত্রস্ত মানুষের মত সকল প্রকার বিপথে গমন রোধ করে শান্ত আর স্থীর হওয়া শিখি। এই করোনা যুগ থেকে শিক্ষা নিয়ে বলে উঠি- প্রকৃতির উপর আর দানবের মত চোখ রাঙিয়ে অত্যাচার করব না। কেননা তার উপযুক্ত প্রতিশোধের প্রয়াশে প্রকৃতি আমাদের এক বিন্দু ছেড়ে কথা বলবে না। ডাক্তার হই, ইঞ্জিনিয়ার হই আর যত বড় বিজ্ঞানীই হই না কেন সবাই যেন সেই মহাবিজ্ঞানীর আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে তাকওয়ার গুনে গুনান্বিত হতে আর এক সেকেন্ডও সময় ব্যয় না করি। সত্য মিথ্যা মিশিয়ে গলা ফুলিয়ে দর্শককে মাতানোর জন্য টিভির টকশোগুলোতে আর যেন চিৎকার করে কথা না বলি। কেননা মহান খোদা মহাগ্রন্থ আল-কোরানে এই চিত্কার করে কথা বলাটাকে গাঁধার কর্কশ কণ্ঠের সাথে তুলনা করেছেন। স্বল্প হায়াতের নির্ধারিত অক্সিজেনের ভোক্তা হয়ে বিশতলা, ত্রিশতলা বিল্ডিং এর জন্য অর্থের পিছনে দয়া করে আর দাপিয়ে না বেড়ায়। পৃথিবীর সব নাজ-নিয়ামত ধুলায় মিশিয়ে অনন্ত কালের যাত্রায় বিলিন হয়ে যেতে হবে এই পরম সত্যে নিজেকে নিবদ্ধ রেখে অল্পতে তুষ্ট থেকে মনের শান্তিতে বলিয়ান হই। অহংকারি আত্মার নিকৃষ্ট পাপে অতিষ্ট হয়ে পৃথিবীটা একেবারে শীর্ণ দেহের তৃষ্ণার্ত পথিকের মত হাঁপিয়ে উঠেছিল। আর হাঁফিয়ে ওঠা এই ধরাধামকে বিশ্রাম দিতে বিধাতা সৃষ্টির সূচনা হতে আজ অবধি নানা যথার্থ পদ্ধতি অবলম্বন করে চলেছেন। অথচ নানা মাধ্যমে আমাদের চোখের সামনে নগন্য কিন্তু কার্যকর পদ্ধতির সেই উদাহরণ স্বমহিমায় প্রকাশ পেলেও চর্ম চক্ষে তা হয়ত আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়না বা দেখেও আমরা না দেখার ভান করে থাকি। এই করনা মহামারিতে চোখকে একটু বিশ্বাস করাতে চাই যে, পৃথিবীর শৃঙ্খলা আনয়নে সেই বিধাতার পদক্ষেপ কত ভয়ঙ্কর হতে পারে। কত গজবকে আমরা গুজব মনে করে নিশ্চিন্তে চলেছি যা সত্যিই আজ বড় আজাবে পরিণত হয়েছে। ধরুন এক কোটি লোক এই মহামারিতে মারা গিয়ে এক জায়গায় স্তুপ করা হলো যার মধ্যে আমার আপনার লাশটাও আছে। একবার ভাবুন তো কত ভয়ঙ্কর সেই বাস্তবতা!

Comments

Popular posts from this blog

খুঁজে ফিরি সেই গ্রাম